“মা জননী”মোঃ মতিউর রহমান
মা ডাকটি অতি মধুর কে না জানে, হৃদয় ভরা মায়া-মমতা দিয়ে সবাই তাকে মানে।
মায়ের পেটে যখন সন্তানের আগমন,তিন মাস পূর্তেই তাঁর বমনের ভাব হয়।
ক্ষুধার জ্বালায় খেতে বসে বটে, দুই মুঠো ভাত মুখে দিয়ে যায় উঠে।
আস্তে আস্তে পেটের মধ্যে সন্তান বড় হতে থাকে, তবুও স্বামীর সংসারে কঠোর পরিশ্রম করতে হয় মাকে।
সেখানে আল্লাহর নেয়ামত খেয়ে লাথি মারে জোরে, মা আমার সহ্য করতে না পেরে মাথা ঘুরে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
নয় মাস থেকে পেটে প্রচন্ড ব্যাথা হতে থাকে, মা বলে- মরে গেলাম রে…., আল্লাহ আল্লাহ ডাকে।
নয় মাস দশ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত ব্যাথার সমাপ্তি ঘটে, বাড়িতে, হাসপাতালে অথবা ক্লিনিকে ফুটফুটে সন্তান হয় বটে।
হায়রে মা-সকল ব্যাথা ভুলে গিয়ে মৃদু হাসে, বলে- আল্লাহর হুকুমে এসে বুক জুড়ালি অবশেষে।
আল্লাহর ইচ্ছায় নানা রকম অসুখ হয় জন্মের পর-মা, নানী, দাদীর দিনের শান্তি, রাতের ঘুম হয় পর।
সন্তানের অসুখের কারণে আত্মীয়-স্বজন থাকে পাশে,
সকলে বলে, ভালো ডাক্তার দেখাও-প্রয়োজনে যাও দূরদেশে।
কনকনে শীতের রাতে সন্তান প্রসাবে ভিজিয়ে দেয় বিছানা, শীতের কাপুনিতে মায়ের ঘুম পাড়া ছিল মানা।
এমনি ভাবে কঠোর সাধনায় পাঁচ বছর করে পার, পাঠশালায় এসে মা বলে, আমার সন্তানকে ভর্তি করেন স্যার।
সন্তান থাকে শ্রেণীতে মা থাকে বাহিরে বসে,কলিজার টুকরা প্রকৃত মানুষ হবে- ভাবনা কিসে।
ভাগ্যের কারণে কোন সন্তানের বাবা যায় মারা,
ভবিষ্যতের চিন্তায় মা হয়ে যায় দিশেহারা।
চলে সংগ্রাম সাধনা সন্তানদেরকে নিয়ে, বাচ্চাদের লেখাপড়া চালিয়ে যায় স্বজনদের দিয়ে।
বাবা থাকে বিদেশে অথবা কোন শহরে,
বাধ্য হয়ে মা আমার কেনা কাটা করে বাজারে।
আজ শিশু কাল কিশোর পরশু যুবক, ধীরে ধীরে সমাপ্তি হয় সন্তানের শ্রেণীর ছবক।
ছেলেকে দেয় বউ,আর মেয়েকে দেয় বর,
অসাধু সন্তানের কারণে মা হতে থাকে পর।
এমনও দেখা যায়-
ছেলে বউকে নিয়ে খায়,
ছেলে থাকে ঘরে মা থাকে বারান্দায়।
তাই বলি- আমরা সন্তানদের আদর্শ করে গড়ে তুলি, নচেৎ তারা আমাদেরকে কোনো একদিন যাবে ভুলে।
চোখের পানি,শরীর দুর্বল, পেটে থাকবে না ভাত, অসুখে-বিসুখে পাবোনা ঔষুধ, পাবো শুধু আঘাত।
দৈনিক গণকথা / সম্পাদক ও প্রকাশক