মোঃ আজগার আলী, জেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরা:
আমরা নিরাপদ নই। “এই ধরনের একজন চিকিৎসককে যদি ঢাকার মতো জায়গায় একাউন্টেবিলিটি ছাড়াই চালিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে সাতক্ষীরার মতো অঞ্চলে আমাদের কী নিরাপত্তা আছে?”
যিনি রাজধানীতে চিকিৎসার নামে নারী সহকর্মীদের ওপর দিনের পর দিন চালিয়েছেন ভয়াবহ যৌন নিপীড়ন, তিনি এখন সাতক্ষীরায়। সরকারি আদেশে বদলি হয়ে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে যোগ দিয়েছেন ডাঃ আশরাফ সিদ্দিকী। এখানকার অনেকেই জানেন না, এই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে রয়েছে একের পর এক যৌন হয়রানির অভিযোগ এবং তদন্তে প্রমাণিত অপরাধের রেকর্ড।
ডাঃ আশরাফ সিদ্দিকী ছিলেন ঢাকার হাজারীবাগে অবস্থিত শামসুননেছা আরজু মনি মা ও শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার। দায়িত্বের সুযোগ নিয়ে সহকর্মীদের কুপ্রস্তাব, জোরপূর্বক স্পর্শ, মানসিক নির্যাতন এমনকি বেতন বন্ধ করে দেওয়ার মতো অপকর্মও করেছেন বলে একাধিক নারী লিখিতভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন। অভিযোগের সংখ্যা এতটাই বেড়েছিল যে বিষয়টি তদন্তে যায় পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় দপ্তরে। তদন্ত কমিটি গঠন হয়, প্রতিবেদন জমা পড়ে। অভিযোগ প্রমাণও মেলে।
এনিয়ে ডাঃ আশরাফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্র পত্রিকা টেলিভিশনে একাধিক খবর প্রকাশিত হয়।
এদিকে ডাঃ আশরাফের বদলির খবরে সাতক্ষীরার স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে এখন অস্বস্তি আর শঙ্কা ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় নারী স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেকেই নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলছেন, “আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। যার বিরুদ্ধে ঢাকায় এত নারী অভিযোগ করেছে, তদন্তে প্রমাণও মিলেছে, তিনি এখন সাতক্ষীরা জেলার সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বসে আছেন।
অভিযোগকারীদের অনেকেই বলছেন, শাস্তির বদলে বদলি যেন সরকারি দৃষ্টিভঙ্গির এক করুণ প্রমাণ। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কতৃপক্ষ এখনো কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি, সেটাই প্রশ্ন। দায়িত্বরত প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ভুক্তভোগীদের কথা শুনতেও রাজি হননি বলে জানা গেছে।
এব্যাপারে জানার জন্য ডাঃ আশরাফ সিদ্দিকীকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং পরিকল্পিত। মূলত অনিয়মিত কর্মচারী কর্তৃক অভিযোগটি দায়ের করা হয়।