মোঃনাজমুল মোরেলগঞ্জঃ
মোরেলগঞ্জ, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫: মোরেলগঞ্জ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে একের পর এক অনিয়ম ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠেছে। সর্বশেষ অভিযোগ, পরিবার পরিকল্পনা সহকারী শামীম আরা এবং তার বিরুদ্ধে চক্রান্তের সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে মেডিকেল অফিসার এবং ভারপ্রাপ্ত পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. হাসান তারেক।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ডা. হাসান তারেকের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, সহকর্মীদের ওপর নির্যাতন এবং তদন্ত প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছে। কর্মচারীদের মতে, অফিসটি এখন একটি ষড়যন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে, যেখানে অনেক ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
সম্প্রতি, ৮ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে অসুস্থ হয়ে স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি হন পরিবার পরিকল্পনা সহকারী শামীম আরা। তবে অভিযোগ রয়েছে যে, ডা. হাসান তাকে ক্লিনিক থেকে ডেকে এনে অপমানজনক ভাষায় গালিগালাজ করেন, যা তার শারীরিক ও মানসিক অবস্থার অবনতি ঘটিয়েছে। শামীম আরা দাবি করেছেন, ডা. হাসান তার চাকরি নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে অবজ্ঞা করেছেন।
শামীম আরার অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি মহাপরিচালক বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেছেন, যেখানে তিনি সুবিচারের দাবি জানান। তবে তদন্ত কমিটি নিরপেক্ষভাবে কাজ করেনি এবং তার অনুপস্থিতিতেই তদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে, যার ফলে তিনি হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিশ্বস্ত সূত্র আরও জানিয়েছে যে, ডা. হাসান তারেক এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী শামীম আরার চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র বাতিল করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন এবং তাকে অফিসে ফিরে আসতে ভয়ভীতি দেখান।
অফিসের কর্মচারীরা পরিস্থিতি সম্পর্কে কথা বলতে ভয় পাচ্ছেন, কারণ ডা. হাসান তারেকের প্রভাবের কারণে পুরো অফিসে এক ধরনের ভীতি বিরাজ করছে। অনেকেই মনে করছেন যে, তাদের বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র হতে পারে যেকোনো সময়।
এদিকে, ভুক্তভোগীর স্বামী অভিযোগ করে বলেন, “ডা. হাসান তারেক আমার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহার করেছেন এবং শারীরিক অসুস্থতার পরও তাকে অপমান করা হয়েছে। এর ফলে, আমার স্ত্রী আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।” তিনি সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচারের দাবি করেছেন, যদিও ডা. হাসান তারেক এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
উল্লেখ্য, ২১ ডিসেম্বর ২০২১ থেকে মোরেলগঞ্জ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার পদ শূন্য থাকায় প্রশাসনিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে, যা মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। স্থানীয়রা দাবি করেছেন, ডা. হাসান তারেককে দ্রুত অপসারণ করে নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করা উচিত।
এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে কিনা, নাকি এই ষড়যন্ত্রের জাল আরও গভীর হবে।