মিজানুর রহমান, শেরপুর জেলা প্রতিনিধি :
শেরপুরে স্বল্প খরচে বহুবর্ষজীবী পানচাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের।
ইতোপূর্বে শেরপুর সদর উপজেলার সামান্য কিছু পানচাষ হলেও এখন তা ক্রমেই বাড়ছে এবং নকলা উপজেলায় ও পানচাষ হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। কৃষি বিভাগ আগ্রহী পানচাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। শেরপুর সদর উপজেলার সূর্যদীর কৃষক আমির হোসেন অনেক আগে থেকেই করেন পানচাষ। তিনি বলেন, স্বল্প পুঁজিতে পানচাষে দীর্ঘমেয়াদি আয় হয়। ৫ শতক জমিতে ৭ বছর আগে আড়াই লাখ টাকা খরচ করে বর্তমানে ফি-বছর আয় আয় তার কমপক্ষে দেড় লাখ টাকা। আমির হোসেন বলেন, সে ছোটকাল থেকেই পানচাষ করে আসছে। তার বাপ-দাদারাও পানচাষ করতেন। পানচাষই তাদের প্রধান জীবিকা। এতেই চলে তার সংসার। তার মত শেরপুর সদরের সূর্যদী, রৌহা, কামারিয়াসহ নকলা উপজেলার প্রায় ২ হাজার পরিবার পানচাষের ওপর নির্ভরশীল । সপ্তাহের ২ হাটে এক একর জমির পানের বরজ থেকেই আয় হয় ১৪-১৫ হাজার টাকা। কৃষকরা বলেন, গ্রামের ৬০-৭০ শতাংশ ঘরেই পানের বরজ আছে। একরে সপ্তাহে ২বার ১৫-১৬ হাজার টাকার পান বিক্রি করা যায়। এভাবেই বছরে দেড়- ২ লাখ টাকা আয় হয়। একবার বরজ তুলতে পারলে ১০-১৫ বছর টিকে থাকে। কোনো সমস্যা না হলে পানের বরজে তেমন খরচ ও নেই। তারা জানান. শেরপুরের উৎপাদিত পান যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এখান থেকে পাইকারি দামে পান কিনে নিয়ে দেশের বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করেন পাইকাররা। পাইকাররা বলেন, এখানকার পান কিনে বিভিন্ন আড়তে বিক্রি করা হয়। শেরপুরে কম দামে ভাল পান পাওয়া যায়। শেরপুরে ৩টি পানের বড় বাজার রয়েছে। বাজারের সতেজ পানের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। পানচাষকে অধিক লাভজনক করতে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হয় কৃষি বিভাগ থেকে। শেরপুর খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপপরিচালক ( উদ্ভিদ সংরক্ষণ ) হুমায়ুন কবীর বলেন, পান একটি অর্থকরী ফসল। শেরপুরের উৎপাদিত পান বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি হয়। চাহিদাও বেশ। মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা পানচাষিদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে আসছেন। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, প্রতিবছরই শেরপুরে বাড়ছে পানের আবাদ। চলতি বছর শেরপুর সদর ৩০ হেক্টর এবং নকলায় ০৩ হেক্টর জমিতে পান চাষ করা হয়েছে। পান উৎপাদন হবে আনুমানিক ৪১০ মেট্রিক টন। যা প্রতিবছরই বাড়বে বলে জানান শেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত উপপরিচালক ( উদ্ভিদ সংরক্ষণ ) কৃষিবিদ হুমায়ুন কবির ।