বাগেরহাটের মোল্লাহাটে গনি শেখ (২৫) নামের এক যুবকের গলায় ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে এটি আত্মহত্যা না পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড—তা নিয়ে এলাকায় চলছে নানা গুঞ্জন।
শুক্রবার (১৬ মে) উপজেলার গাংনী ইউনিয়নের চরকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত গনি শেখ ওই গ্রামের মৃত রিফাত শেখের পুত্র।
নিহতের মা বলেন, “অসুস্থতার খবর পেয়ে ছুটে এসে দেখি আমার ছেলে লাশ হয়ে পড়ে আছে। পরে জানতে পারি, নাকি সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু আমি দেখেছি, তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন ও পোড়া ক্ষত রয়েছে। আমার ছেলে আত্মহত্যা করেনি, তাকে মেরে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।”
নিহতের ভাই জাকারিয়া শেখ বলেন, “ঘটনার রাতে জাবের শেখ ও লোয়াব সরদার গনিকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর সকালে দেখি সে ঘরের মধ্যে ঝুলছে। আমি মনে করি, এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জাবের শেখ ও লোয়াব সরদার জড়িত থাকতে পারে।”
নিহতের স্ত্রী লিয়া বেগম (১৮) বলেন, “ঘটনার দিন দেনা-পাওয়া নিয়ে গনির সাথে আমার কথা কাটাকাটি হয়। রাতে সে মুখ খোলা বোতলে সেভেনআপ এনে দেয়। আমি অর্ধেক খেয়ে বাকিটা ওকে খেতে দিই। এরপর সে আমাকে বলে, ‘তুমি রাগ করোনা ময়না, আমি সব দেনা শোধ করে দিব, তোমাকে আর কাজ করতে হবে না, আমি বাজার-ঘাট করব।’ এরপর সে গাঁজা বানিয়ে খাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। আমি আমার সন্তানকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। রাতে কী হয়েছে, কিছুই জানি না। সকালে দেখি সে ঝুলে আছে, কিন্তু তার পা মাটিতে লেগে ছিল। আমি নিজেই তার গলার দড়ি কেটে দিয়েছি।” তিনি এটিকে হত্যা বলে দাবি করেন এবং দোষীদের শাস্তি চান।
এ বিষয়ে মোল্লাহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “নিহতের বড় ভাই একটি আত্মহত্যার সংবাদ দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করে। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ মৃত্যু আত্মহত্যা, নাকি হত্যাকাণ্ড—সে প্রশ্নের জবাব এখন খুঁজছে এলাকাবাসী।