মিজানুর রহমান, শেরপুর জেলা প্রতিনিধি:
ঢাকাস্থ ঝিনাইগাতী যুব ফোরামের উদ্যোগে ঝিনাইগাতী উপজেলার সার্বিক উন্নয়নে সংলাপ ও ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঝিনাইগাতীস্থ খাদ্য ব্যবসায়ী সমিতির মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আয়োজনে পুষ্পধারা প্রপার্টিজ লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকাস্থ ঝিনাইগাতী যুব ফোরামের সভাপতি মিডিয়া ব্যক্তিত্ব অ্যাড. মনিরুজ্জামান (শাশ্বত মনির)’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব শাহ মো.আবুরায়হান আলবেরুনী।
ফোরামের প্রধান সমন্বয়ক সুলতান মাসুদুজ্জামানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন নির্বাহী সভাপতি রেজাউল ইসলাম রেজু, সাধারণ সম্পাদক রাশেদ বিন রাজ্জাক লোচন, শিকর সভাপতি আব্দুল আউয়াল, দুর্নীতি দমন কমিশন ঝিনাইগাতীর সভাপতি অধ্যাপক আবুল হাসেম, দৈনিক ইনকিলাবের স্টাফ রিপোর্টার এস. কে. সাত্তার, মাওলানা জহুরুল ইসলাম চান, মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আইয়ুব আলী আকন্দ বিদ্যুৎ, সাবেক অধ্যক্ষ আবু বকর, শিক্ষক মো. রুস্তম আলী, স্থানীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি রমজান আলী, সম্পাদক এপেক্সিয়ান আলমগীর হোসাইন প্রমুখ। প্রধান অতিথি বলেন ঝিনাইগাতীর উন্নয়ন তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া সম্ভব নয়। নিজস্ব শক্তি, দক্ষতা ও সংগঠিত প্রচেষ্টায় এঅঞ্চলকে উন্নতির দিকে নিয়ে যেতে পারি।
সংগঠনগুলো যদি একত্রে কাজ করে, তাহলে আমাদের অঞ্চলও দেশের অন্যান্য উন্নত এলাকার মতো সমৃদ্ধ হবে। ফোরাম সভাপতি অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান (শাশ্বত মনির) বলেন, ঝিনাইগাতী শুধু একটি ভূগোলিক এলাকা নয়, এটিই আমাদের শিকড়। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি, তাবে এলাকাকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। লক্ষ্য শুধু ঢাকায় অবস্থানরত ঝিনাইগাতীবাসীদের মধ্যে সম্পর্ক বজায় রাখা নয়। বরং গ্রামের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো।
মেধাবী শিক্ষার্থীদের সহায়তা করা এবং সামাজিক সমস্যা সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখা। ঝিনাইগাতীর যুব সমাজ যদি একত্রিত হয়ে সমাজ উন্নয়নে কাজ করে, তাহলে একদিন এটি দেশের রোল মডেল হিসেবে গড়ে উঠবে। ফোরামের নির্বাহী সভাপতি বলেন, ঝিনাইগাতী একটি সম্ভাবনাময় উপজেলা হলেও অনেক ক্ষেত্রেই পিছিয়ে রয়েছে। এই সংগঠনের উদ্দেশ্য ঝিনাইগাতীবাসীদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলা।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সমাজ সেবামূলক কাজের মাধ্যমে এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখা। একটি সমাজের পরিবর্তন তখনই সম্ভব যখন যুবসমাজ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে। ঢাকাস্থ ঝিনাইগাতী যুব ফোরাম সে লক্ষ্যেই কাজ করছে। ভবিষ্যতেও কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।ফোরামের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের লক্ষ্য শুধু আলোচনা করা নয়, বরং আমরা চাই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে। ঝিনাইগাতীর উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ নিতে চাই, শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ, ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং, উদ্যোক্তাদের সহায়তা এবং স্থানীয় পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধির কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তারা ঝিনাইগাতীর পিছিয়ে পড়ার মূল কারণসমূহ তুলে ধরেন। তারা বলেন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত না হওয়া, মানসম্মত শিক্ষা ও চিকিৎসার অভাব, কর্মসংস্থানের সংকট, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবÑএসব কারণে উপজেলাটি উন্নয়নের দিক থেকে পিছিয়ে আছে। বক্তাগণ ঝিনাইগাতীর উন্নয়নে সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিতে মতামত দেন। তারা উল্লেখ করেন, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন, শিক্ষার প্রসার, স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি, হাতির অভয়ারণ্য গঠন, মহারিশ নদীতে বাঁধ নির্মাণ, ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি ও দুর্যোগ মোকাবিলায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে উপজেলাটিকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব। এছাড়া উপজেলায় যে প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে তার সঠিক ব্যবহার করা গেলে তা এই অঞ্চল ও দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।